করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে টিএমএসএস
ভিক্ষুকের মুষ্টি চালের মাধ্যমে গড়ে তোলা এনজিও প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক করোনায় হাজার হাজার মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। বলছি বাংলাদেশের একজন সফল উদ্যোক্তা অধ্যাপিকা বেগম হোসনে আরা করোনায় মেরুদণ্ড ভেঙে পড়া দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংক্ষিপ্ত গল্প।
একজন হোসনে আরা, যিনি শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও হয়ে উঠেন সমাজকর্মী হোসনে-আরা। ১৯৮০ সালে নিজ শহর বগুড়াতে, ১২৬ জন ভিক্ষুকের মুষ্টি চালের মাধ্যমে সংগ্রহীত ২০৬ মন চাল নিয়ে দেশের বড় এনজিও গুলোর অন্যতম প্রতিষ্ঠান ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির নির্বািহী পরিচালকের দাায়িত্ব পালন করছেন।
সারাবিশ্বের মতো করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ রুপ দেখা দিয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। করোনার প্রবল থাবা থেকে বাদ যায়নি বগুড়া জেলা। বগুড়ায় করোনা শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথে ঘোষনা আসে জেলা লকডাউন, বন্ধ হয়ে যায় কর্মজীবী মানুষের রোজগারের রাস্তা।
খাদ্য সংকটে থাকা এমন গরীব দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে টিএমএসএস চালু করে মানবতা স্টোর। যেখানে প্রতিদিন ১০০ জন মানুষ প্রয়োজনীয় খাদ্য বিনামূল্যে সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের উপকরণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন এ ষ্টোর দুপুর ২.৩০মিনিট থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সেই সাথে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিগণ দূর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য যে কোন ত্রাণ সামগ্রী এই মানবতা ষ্টোরে রাখতে পারবেন।
গত ৫ ই এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি করোনার এই ভয়াবহতা না কাটিয়ে উঠা পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন বলে জানান বেগম হোসনে আরা।
পাশাপাশি প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে শত শত মানুষেরা মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি, রমজান উপলক্ষে ১ রমজান থেকে পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষে ৫০০ পরিবারের মাঝে পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন।
হাসপাতালের এবং মাঠে কাজ করা স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তৈরি করছেন পিপিই। ইতিমধ্যে টিএমএসএস তাদের পরিচালিত বিভিন্ন কর্মস্থলে সচেতনতামূলক মাইকিং, লিফলেট,মাস্ক,সাবান বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে । করোনা মহামারি বাংলাদেশে যখন ধীরে ধীরে প্রকট আকার ধারন করছে ঠিক সেই মুহুর্তেও টিএমএসএস মাসুদা মেটারনিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের নেতৃেত্বে সুষ্ঠভাবে সকল ডাক্তার গণ সহ ও স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট কর্মীগনরা পিপিই পরিধান করে আগত রোগীদের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
জরুরী প্রয়োজনে ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে হটলাইন নাম্বার ও । এছাড়াও জরুরি চিকিৎসা সেবা দেয়ার লক্ষ্যে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ এবং রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল এর অভিজ্ঞ ডাক্তার যাচ্ছে রোগীর বাড়ি বাড়ি।
করোনার ভয়াবহতা একদিন কেটে যাবে বলে বেগম হোসনে আরা বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। মানুষ হিসাবে একজন মানুষের জন্য আমরাও তাদের পাশে থাকতে চাই। করোনায় আক্রান্ত মানুষকে অবহেলা না করে তাদের মানসিক প্রশান্তির জন্য হলেও সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।