মেডিকেলের পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘোষিত দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা বাতিল ও সেশনজটমুক্ত মেডিকেল শিক্ষাবর্ষের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়।
রবিবার দুপুরে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। সাধারণ মেডিকেল এবং ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শাহবাগের চতুর্মুখী সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এ সময় বিক্ষোভ স্থলে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর শিক্ষার্থীরা শাহবাগের দিকে অগ্রসর হয়।
ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের প্রফেশনাল বা ফাইনাল পরীক্ষার জন্য তারিখ ঘোষণা করা হয়। তবে করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষায় বসতে চান না মেডিকেল ও ডেন্টালের শিক্ষার্থীরা। বিশ্বব্যাপী যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে তখন পরীক্ষায় বসলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হবে। এ কারণে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান না শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনা মহামারিতে পেশাগত পরীক্ষা নয়, এর বিকল্প চাই, অনতিবিলম্বে সেশনজটমুক্ত করতে অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশনা ঘোষণা, পরীক্ষা ও ক্লাস সংক্রান্ত আদেশ এর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করতে হবে।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনা মহামারীতে পুরো বিশ্ব পিছিয়ে গেছে। এই সময়ে সবাই খুঁজছে স্বাভাবিক পরিস্থিতির বিকল্প কিছু। তাদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল কার্যক্রমে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে কাজ চলমান রাখার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে তখন আমাদের দেশে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অথচ কিছুদিনের মধ্যে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হবে বলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
তারা বলেন, যে সময়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলছেন এই সময়ে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবিধি থাকবে, এমন একটি সময়ে আমাদের উপর প্রফেশনাল পরীক্ষার মতো একটি পরীক্ষা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পরীক্ষা দেয়ার আগে আবাসিক হলগুলোতে একমাস অবস্থান করার বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হলে একটি রুমে তিন থেকে চারজন করে শিক্ষার্থী থাকে। এই অবস্থায় তারা কেউ আক্রান্ত হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষ নিবে না। কেউ আক্রান্ত হলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ফলে শিক্ষার্থীরা ছয় মাস পিছিয়ে পড়বে।
আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বেসরকারি মেডিকেলের এক শিক্ষার্থী জানান, গত সাত মাসে ক্লাস বন্ধ থাকার পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশের পর প্রতিটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ভাতা পরিশোধের নোটিশ দিচ্ছে।
করোনার ঝুঁকি শেষ হলে তারা পরীক্ষার টেবিলে বসতে চায়। এছাড়া অনলাইন ক্লাস বন্ধ হওয়ার কারণে পড়ে যাওয়া সেশনজট থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত অনলাইন ক্লাস যেন শুরুর দাবি জানায় তারা।
ইত্তেফাক