লাইফস্টাইল

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার তাৎক্ষণিক ঘরোয়া উপায়

বাঙালি ভোজনরসিক। আর ভোজনরসিক হওয়াতে তেল-মশলা বেশি দিয়ে কষিয়ে রান্না করা তাদের অভ্যাস। অতিরিক্ত তেল-মশলা খাওয়ার কারণে অনেকের আবার গ্যাস্ট্রিকেরও সমস্যা হয়। বদহজম, গ্যাস, ফোলাভাব, হেঁচকি, অম্বল, পেটে ব্যথা, আলসার এবং বমি বমি ভাব গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এগুলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে প্রায়শই প্রাপ্ত পুরষ্কার, যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে খাওয়া, ধূমপান, অ্যালকোহল পান, ঘুমের ব্যাধি, মানসিক চাপ ইত্যাদি আছে। তাই চলুন জেনে নিই কেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় ও এ সমস্যা দূর করার তাৎক্ষণিক ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে-

গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণ :

১. আপনার খাদ্যতালিকায় ফাইবারের কম মাত্রা থাকা

২. নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের অভাব

৩. অতিরিক্ত পরিমাণে দুগ্ধজাত দ্রব্য

৪. নিয়মিত টয়লেট না হওয়া

৫. অতিমাত্রায় ডায়রিয়ার ওষুধ খাওয়া

৬. অ্যান্টাসিড যাতে ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম থাকে

৭. অন্যান্য ওষুধ যা আয়রন সমৃদ্ধ সেইসাথে ব্যথানাশক, এন্টিডিপ্রেসেন্টস৮. গর্ভবতী হওয়া

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার উপায় : যদি কোনো ব্যক্তির বারবার গ্যাস্ট্রাইটিস হয় তবে ঘরোয়া প্রতিকার ছাড়াও তাকে অবশ্যই তার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। তবে আপনি চাইলে নিম্ন লিখিত উপায়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্য দূর করার চেষ্টা করতে পারেন।

ভেষজ চা

গ্যাস্ট্রিকের ঘন ঘন সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে আইবিএস, সংক্রমণ, স্নায়বিক সমস্যা বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। যদি এ অস্বস্তি থেকে দ্রুত ত্রাণ পেতে চান, তাহলে এক কাপ গরম চা পান করুন। আর এই চা তৈরি করতে পারেন আপনার রান্না ঘরে থাকা ভেষজ দিয়ে। যেমন: মৌরি, আদা ইত্যাদি। এই ভেষজ চা তাৎক্ষণিকভাবে ফোলাভাব, বুকজ্বালা, গ্যাস, শিশুদের কোলিক এবং ক্ষুধা হ্রাস করতে সাহায্য করে। উপরন্তু এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও প্রদর্শন করে এবং অন্ত্রের অনিয়ম থেকে মুক্তি দিতে পারে।ঠান্ডাদুধ

এক গ্লাস ঠাণ্ডা, চর্বি ও চিনিহীন দুধ পান করলে অ্যাসিডিটি বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সময় অনুভূত জ্বালাপোড়া থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পাওয়া যায়। দুধে ক্যালসিয়াম আছে। যা কেবল অ্যাসিডকে নিরপেক্ষ করে না বরং এর উৎপাদনকে বাধা দেয়।পুদিনারজুস

আপনি যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন আর তাৎক্ষণিক এক চা চামচ পুদিনার রস বা পুদিনার চা কিংবা পুদিনার চাটনি সেবন করেন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেরে পারেন। এ ছাড়া এটি পেটের ব্যথা কমাতেও দ্রুত কাজ করে।লেবুপানি

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক উপশম পেতে লেবু পানি কিংবা লেবু চা খেতে পারেন। এর স্বাদ এবং উপকারিতা বাড়ানোর জন্য কেউ কেউ লেবু পানির সঙ্গে এক চিমটি কালো লবণ, ভাজা জিরা গুঁড়ো এবং আজওয়াইন যোগ করতে পারেন। এ ছাড়া এক গ্লাস লেবু পানিতে এক চিমটি বেকিং সোডাও যোগ করে পোন করতে পারেন। এটি অ্যাসিডিটি কমায় ও হজমে সহয়তা করে।লবঙ্গ

প্রতিদিন ২-৩টি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমি বমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।এলাচ

লবঙ্গের মতো এলাচ গুঁড়ো খেলে অম্বল দূরে থাকে।ইস্পাগুলা

ইস্পাগুলা সাধারণত ইসবগুল নামে পরিচিত। গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় বিস্ময়কর কাজ করে এটি। দইয়ের সাথে এটি খেলে পেট খারাপ, বদহজম এবং আলগা মল উপশম হয়। এটি ঠান্ডা দুধের সাথে খেলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গের চিকিৎসায় সাহায্য করে। গরম দুধের সাথে ইসবগুল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।চিয়াবীজ

চিয়া বীজের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গের চিকিৎসায় সাহায্য করে। এছাড়াও এগুলো পুষ্টি, ফাইবার এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। চিয়া বীজ আপনি ঠান্ডা পানীয়, স্মুদি, ফলের রস, দই, পোরিজ, পুডিং ইত্যাদিতে যোগ করতে পারেন।শসা

শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।দই

দই আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে।পেঁপে

পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামের এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।

সূত্র : হেলথলাইন

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button