সারাদেশ

জমি নিয়ে জেরে মসজিদে তালা, নামাজ বন্ধ

চার শতক জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে নওগাঁয় যাতায়াতের রাস্তায় বেড়া দেওয়ার পর সর্বশেষ মসজিদে তালা লাগিয়েছে এক ব্যক্তি। শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় হযরত ওমর (রা.) জামে মসজিদে তালাবদ্ধ থাকায় আজান-নামাজ বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মুসল্লিদের পক্ষে মসজিদ কমিটির সভাপতি এনামুল হক বাদী হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, দেবীপুর গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ের কাছে বোয়ালিয়া-দেবীপুর সড়কের পাশে দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তির দান করা ৭ শতক জমির ওপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে হযরত ওমর (রা.) জামে মসজিদ নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের পূর্বে পাশে চার শতক সরকারি জমি রয়েছে। ৩৭৩ নম্বর দাগের ওই জমির খতিয়ানে জনগণের যাতায়াতের জন্য সরকারি ডহর (রাস্তা) নামে উল্লেখ রয়েছে।

নতুন মসজিদ নির্মাণের পর এলাকার মুসল্লিরা মসজিদে যাতায়াতের জন্য ওই জমিতে মাটি ফেলে উঁচু করে রাস্তা ব্যবহার করতে চাইলে দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক ওই জমি তাঁর ব্যক্তি মালিকানাধীন দাবি করে গ্রামবাসীকে বাধা দেন এবং গ্রামবাসীর ওপর চড়াও হয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেন।

এক পর্যায়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে মসজিদটিতে চলাচলের রাস্তা তিনি বন্ধ করে দেন এবং সর্বশেষ শনিবার দুপুরের দিকে আব্দুর রাজ্জাক ও তার লোকজন প্রথমে মসজিদটি উচ্ছেদসহ ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পরে মসজিদের মূল দরজাসহ সব দরজায় একে একে ৩টি তালা লাগিয়ে তা বন্ধ করে দেন। এই ঘটনার পর মুসল্লিরা জোহর, আছর ও মাগরিব নামাজের আজান দিতে পারেননি এবং নামাজ আদায় করতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে, গ্রামের কেউ ওই মসজিদের দিকে যেতে চাইলে তাকে রাজ্জাকের লোকজন ধাওয়া করে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

নওগাঁ সদর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মে সরকারি জমি দখলমুক্ত করা ও অবৈধভাবে ভোগদখল করার জন্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলার সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষে হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি লিখিতভাবে আবেদন করেন। ওই সময় স্থানীয় এবং সদর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে একাধিক কর্মকর্তা সরেজমিনে এসে আব্দুর রাজ্জাকের দখলে থাকা সরকারী ৪ শতক জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল যা এখনো তিনি ছেড়ে দেননি।

এই ব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক মসজিদে তালা লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার কেনা জমিতে মসজিদের নামে গ্রামের কতিপয় লোকজন জবর দখল করার চেষ্টা করছে। সেই জমি রক্ষার জন্য আমার যা করার প্রয়োজন তাই করছি।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button