নির্বাচনবগুড়া জেলা
প্রধান খবর

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে কে এই এনসিপির প্রার্থী ওয়াকি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ বিএনপির দুর্গখ্যাত বগুড়া-৬ (সদর) আসনে প্রার্থী হিসেবে আব্দুল্লাহ-আল-ওয়াকির নাম ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

আসনটিতে এবারই প্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভোট করবেন বলে দলটি প্রাথমিক মনোনয়নে জানিয়েছে। বিএনপির নিজ ঘরের আসনে এনসিপির প্রার্থীর ঘোষণার পর থেকেই দেশ তথা বগুড়ার রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল ওয়াকি এনসিপির জাতীয় কিংবা জেলা-উপজেলার কোনো পদে ছিলেন না। তবে তিনি ২০০৮ সালে বিকল্প ধারার হয়ে বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।


নির্বাচন কমিশেনর তথ্য বলছে, ২০০৮ সাল পর্যন্ত সব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন বিএনপির দখলে ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই আসনে চারবার সংসদ সদস্য হন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ২০১৪ সালে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাপার নুরুল ইসলাম বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি শপথ না নেওয়ায় উপনির্বাচনে বিএনপির গোলাম মো. সিরাজ বিজয়ী হন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান বিজয়ী হন।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কথা হয় আব্দুল্লাহ আল ওয়াকির সঙ্গে। ২০০৮ সালে বিকল্প ধারার হয়ে বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচনের পর এবার এনসিপিতে থেকে নির্বাচনের বিষয়ে তিনি জানান, এনসিপি নমিনেশনের জন্য আবেদন করতে আহ্বান করেছিল। সেখানে আমি আমি করেছিলাম। তারা আমাকে গ্রহণযোগ্য মনে করেছে। এটা খুশির খবর।


ওয়াকি অন্য রাজনীতিতেও তেমন সক্রিয় ছিলেন না। তবে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান থেকে তিনি নির্বাচন করছেন বলেন দাবি করেন। ওয়াকি বলেন, ২০০৭ সালে এক এগারোর সময় আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এরপর ২০০৮ সালে আমি বিকল্প ধারায় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। পরে ২০১৪-১৫ সালের দিকে আমি নিজের একটি সংগঠন তৈরি করি। তার নাম জনতার শক্তি। ফেসবুকে অনেক এক্টিভ ছিলাম। কিন্তু জনশক্তি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায়নি।


সব ছেড়ে এনসিপিতে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, এনসিপি দেশের গণঅভ্যুত্থানে নের্তৃত্ব দিয়েছেন। এদের সম্মান আছে, বিশ্বাস আছে, গ্রহণযোগ্যতা আছে; এই কারণে এনসিপিতে আসা।’


বিকল্প ধারা কেন ছাড়লেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিকল্প ধারা জোটের সঙ্গী হয়েছিল। আর এই দলের প্রতিষ্ঠাতা একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মারা যাওয়ার পর তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিস্কার নয়। তারা আর কামব্যাক করবে বলে মনে হয় না। এ কারণে তাদের অবস্থান আমার ভালো লাগেনি। কিন্তু এনসিপির এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার। যেমন এনসিপির যে ২৪ ধারা দাবিগুলো আছে, জুলাই সনদে তাদের যে আস্থা এবং গণভোটে তাদের যে হ্যাঁ ভোট; এই বিষয়গুলো এনসিপিতে পরিষ্কার। এই কারণে এনসিপিতে আসা।’


২০০০ সালে ইংল্যান্ডে পড়তে যান। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে ওখানেই চাকরি শুরু করেন। বিএনপির শাষণামলে বাংলাদেশ মোস্ট করাপ্টটেড দেশ হওয়ার পর তিনি দেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।


বগুড়া সদর আসনের এনসিপির এই প্রার্থী আরও বলেন, এরপর ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার করার সময় ২০১২ সালে আমি মারাত্মক হামলার শিকার হই। এরপর চিকিৎসার জন্য আমি দেশের বাহিরে চলে যাই। সেখানেই ছিলাম।এরপর দীর্ঘ বিরতির পর চলতি বছরের মার্চে দেশে আসেন ওয়াকি। আসার পর আবার নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ২০০৮ সালের ভোটে ওয়াকি ৬২৯ ভোট পেয়েছিলেন কুলা মার্কায়। তবে এবার ভোটে জয়ের বিষয়ে আশা প্রকাশ করে আব্দুল্লাহ-আল-ওয়াকি বলেন, মানুষ এখন ভিন্ন চিন্তা করতে শিখে গেছে। মানুষকে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে অনুপ্রাণিত করা গেলে এখানে ভোটের সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে। কারণ এনসিপির প্রতি মানুষের বিশ্বাস আলাদা। সুতরাং জয়ের বিষয়ে আশা করা যেতেই পারে।


বগুড়া-৬ আসনে এবার জামায়াতের পক্ষ থেকে বগুড়া শহর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল নির্বাচন করবেন। তিনিও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, দলীয় সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। এ ছাড়া আসনটিতে বাসদ জেলা সদস্য সচিব দিলরুবা নূরীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button