বিশ্বে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক দিয়ে ২য় বাংলাদেশ

ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলনের ২৫তম আসর ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি ‘ডব্লিউসিআইটি ২০২১’ এবং ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠান চলবে চার দিন।
রাষ্ট্রপতি তার বক্তৃতায় বলেন, সরকার বিগত এক যুগে ডিজিটাল বাংলাদেশের চার স্তম্ভ- কানেক্টিভিটি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, ই-গভর্মেন্ট এবং আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন ঘিরে নেওয়া অধিকাংশ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। ফলে দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইড কমে আসছে।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম কমানো, অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল যন্ত্র হাতের নাগালে আনার পাশাপাশি মানুষের হাতের মুঠোয় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জনগণ এখন ঘরে বসেই দুই শতাধিক নাগরিক সেবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ২০২১ সালে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলনের ২৫তম আসর ‘ডব্লিওসিআইটি ২০২১’-এর আয়োজক বাংলাদেশ। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়। এ আয়োজন অবশ্যই বাংলাদেশে আইসিটি খাতের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুয়ালাইজার’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশে গড়ে উঠছে ডিজিটাল অর্থনীতি। আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ও আইটিসেবা সরবরাহ হচ্ছে। আইটি খাতে রপ্তানি ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এ আয় ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে এবং জিডিপিতে সফটওয়্যার ও আইসিটি সেবা খাতের অবদান ৫ শতাংশে উন্নীত হবে। এ লক্ষ্যে দেশজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ৩৯টি হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক থেকে সারাবিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশে সাড়ে ৬ লাখ সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। তাদের পেশাগত উন্নয়নে আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি একদিকে যেমন আমাদের জন্য অবারিত সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার ও জালিয়াতির কারণে অনেক চ্যালেঞ্জেরও জন্ম দিয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির বিনিময় ও হস্তান্তর বিশ্বব্যাপী উন্নয়নে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবন বা আমদানিই যথেষ্ট নয় বরং এর টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।