শীত এলেই টনসিলের ব্যথা, কী করবেন?

ঋতু বদলের সময় গলা ব্যথা, কাশি, নাক বন্ধ ও সর্দির প্রকোপ বেড়ে যায়। শীতকালে অনেকের নাক দিয়ে পানি পড়া, মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হওয়া বা লালা পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও সাধারণ হয়ে ওঠে। শুধু শিশু নয়, প্রাপ্তবয়স্করাও টনসিল ও অ্যাডিনয়েডজনিত সমস্যায় ভোগেন। হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও তীব্র হয়।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রিয়ঙ্কর পাল জানান, টনসিলের ব্যথা দু’ধরনের—অ্যাকিউট (তীব্র) ও ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদি) টনসিলাইটিস। ঠাণ্ডা লাগলে গলার দুই পাশে থাকা টনসিল ফুলে ওঠে এবং ব্যথা শুরু হয়। একই সময় নাকের পেছনের অ্যাডিনয়েড গ্রন্থিও বড় হয়ে শ্বাস নিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে—বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
টনসিল তৈরি হয় লিম্ফয়েড কোষ দিয়ে, যা শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ। কিন্তু সংক্রমণ বারবার হলে এই কোষে জীবাণু বাসা বাঁধে এবং প্রদাহ বাড়ে। এতে তীব্র গলাব্যথা, খাবার গিলতে কষ্ট, খুসখুসে ভাব, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, মুখে দুর্গন্ধ, কান–মাথায় ব্যথা, জ্বর, খিঁচুনি এবং গলার লসিকা গ্রন্থি ফোলা—এসব উপসর্গ দেখা দেয়। অনেক সময় গার্গল বা প্যারাসিটামলেও ব্যথা কমে না।
চিকিত্সা কী
চিকিৎসায় সাধারণত অ্যাকিউট টনসিলাইটিসে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উষ্ণ লবণ-পানিতে গার্গল, লেবু বা আদা চা গলায় আরাম দিতে পারে। গলাকে ঠাণ্ডা থেকে দূরে রাখা জরুরি। ব্যথা ও জ্বর বেশি হলে প্যারাসিটামল দেওয়া হলেও নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়।
যাদের বছরে তিন–চারবার টনসিল সংক্রমণ হয়, তাদের ইএনটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে টনসিলেকটমি (টনসিল অপসারণ) করতে হতে পারে। চিকিৎসা উপেক্ষা করলে এটি ‘সেপটিক ক্রনিক টনসিলাইটিস’-এ রূপ নিতে পারে, যা হৃদযন্ত্র ও কিডনিতে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার



