শীতের সকালে রুটির সঙ্গে গুড়, দুধে গুড়, পিঠায় গুড় – বাঙালির শীত মানেই গুড়ের উৎসব। তবে বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগই চিনি-রং মিশিয়ে তৈরি।
গুড়ের গুণাগুণ বিস্ময়কর। এতে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, জিঙ্ক, ফোলেইট, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়ামসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকে।
এছাড়াও থাকে নানান ভিটামিন, যা দেহের পুষ্টি ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সাধারণত খেজুরের রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি করা হয়।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পুরানো গুড় ব্যবসায়ী মোমিনুর রহমান মন্টু বললেন, “ভেজাল খেলে শুধু ডায়াবেটিস বাড়বে, পুষ্টি পাবেন না। আসল গুড়ে আয়রন-ক্যালসিয়াম-পটাসিয়াম থাকে।”
ঘরে বসে কার্যকর পরীক্ষা
পানি দিয়ে
এক গ্লাস পরিষ্কার পানিতে গুড়ের টুকরা ফেলুন।
- আসল গুড় ধীরে ধীরে গলে পানি হালকা লালচে-বাদামি করবে।
- ভেজাল হলে সাদা স্তর ভাসবে বা পানি দুধের মতো সাদা হয়ে যাবে।
ভিনেগার দিয়ে
- এক চামচ গুড়ের গুঁড়াতে চার-পাঁচ ফোঁটা ভিনেগার মেশান।
- ফেনা বা বুদবুদ উঠলে শতভাগ ভেজাল – চিনি ও বেইকিং সোডা মেশানো।
- আসল গুড়ে কোনো ‘রিঅ্যাকশন’ বা বিক্রিয়া হবে না।
রং-গঠন-গন্ধ পরীক্ষা
- আসল গুড়: গাঢ় কালচে-বাদামি, হাতে চটচটে, ভাঙলে খসখসে শব্দ, গন্ধে হালকা ধোঁয়া-মাটির সুবাস পাওয়া যায়।
- ভেজাল গুড়: সাদাটে/ হলদেটে/ অতিরিক্ত চকচকে, হাতে লাগে না, গন্ধহীন বা রাসায়নিক গন্ধ পাওয়া যেতে পারে।

চেখে দেখা
- আসল গুড়ে মিষ্টির সঙ্গে হালকা ঝাঁঝ বা তিতকুটে স্বাদ থাকে।
- ভেজালে শুধু চিনির মিষ্টি, কোনো ঝাঁঝ নেই। নোনতা লাগলে একদম ফেলে দিন।
চাপ দিয়ে পরখ
দুই আঙুলে চেপে দেখুন।
- আসল গুড় নরম-চটচটে।
- ভেজাল গুড় শক্ত, চাপলে গুঁড়া হয়ে যায়।
কেনার সময়েই ধরে ফেলুন
- দাম খুব কম হলে সন্দেহ করুন।
- গ্রাম থেকে আনানো গুড়ে ছোট ছোট কালো দাগ (রসের ছিবড়ে) থাকে – এটা আসলের চিহ্ন।
- প্যাকেটে ‘খাঁটি খেজুর গুড়’ লেখা থাকলেও পরখ করুন। অনেকে চিনি দিয়ে রং মিশিয়ে বিক্রি করে।
মন্টু বললেন, “যারা এই টেস্টগুলো করে, তারা আর কখনও ঠকেন না। আসল গুড় দিয়ে পিঠা বানালে স্বাদ আলাদা, শরীরেও পুষ্টি যায়।”
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম



