
নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খলিশাকান্দি গ্রামে সাদিয়া মোস্তারিন ও তার দুই সন্তান নিহতের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
রোববার বেলা ১২ টার দিকে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শাজাহানপুর উপজেলার খলিশাকান্দি, ভান্ডারপাইকা গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নিহত সাদিয়ার চাচা নুর মোহাম্মদ সেলিম জানান, খলিশাকান্দিতে সাদিয়া, তার দুই সন্তান সাইফা ও সাইফের নির্মম মৃত্যু হয়েছে। এটা আমাদের এলাকার জন্য একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। এই মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ সাদিয়াকে আমরা তার ছোটবেলা থেকে চিনি। সে কখনই আত্মহত্যা করার মত মেয়ে না।
মানববন্ধনে তিনি দাবি করেন, এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজন। আমরা এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর সকালে খলিশাকান্দি দহপাড়ার টিনশেড ঘর থেকে সাদিয়া (২২), তার তিন বছরের মেয়ে সাইফা এবং সাত মাসের ছেলে সাইফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুই শিশুকে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং সাদিয়ার গলায় ওড়না পেঁচানো দাগ দেখা যায়।
এ ঘটনায় সাদিয়ার স্বামী সেনাসদস্য শাহাদাত হোসেন কাজলকে (২৭) আটক করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সাদিয়ার মা রাবেয়া সুলতানা শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় কাজলকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পড়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় আদালত।
মামলার এজাহারে রাবেয়া সুলতানা উল্লেখ করেন, গত তিন বছর ধরে কাজল তার মেয়ের ওপর নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। জমি বিক্রির টাকা এবং মোটরসাইকেল কেনার জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। ঘটনার আগের দিনও শাহাদাত ফোন করে টাকা দাবি ও সাদিয়াকে মারধরের কথা জানান।
এজাহারে রাবেয়ার দাবি, ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুরের আগে কোনো এক সময়ে শাহাদাত ও অজ্ঞাত সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই শিশুকে হত্যা করেন এবং সাদিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত মরদেহ এবং পাশেই রক্তবিহীন একটি লোহার বটি দেখতে পান, যা তাদের মতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ইঙ্গিত বহন করছে।



