পুরাতন দলিল খুঁজে পাওয়ার নিয়ম-কানুন ও আইনি প্রক্রিয়া

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
অনেক সময় পুরাতন জমির দলিল খুঁজে বের করা জরুরি হয়ে পড়ে। হতে পারে দলিলটি ২০–৩০ বছর আগের কিংবা আরও পুরোনো। দলিল দুর্ঘটনায় নষ্ট হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে, অথবা হাতে শুধু কপিও নেই—এমন পরিস্থিতিতে আইনি জটিলতা, মামলা বা জমি-সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে দলিল উদ্ধার অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে অ্যাডভোকেট মোঃ আমির হামজা লিমন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানান, রেজিস্ট্রি অফিসের নির্ধারিত নিয়ম মেনে এবং আইনের বিধান অনুসারে পুরাতন দলিল উদ্ধার করা সম্ভব।
আইনের বিধান
রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮ এর ৫৭(১) ধারা অনুযায়ী, যে কেউ নির্ধারিত ফি প্রদান করে স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত রেজিস্টার বহি ও সূচিবহি পরিদর্শন করতে পারেন। একই আইনের ৬২ ধারায় বলা আছে, এসব তথ্যের ভিত্তিতে সার্টিফায়েড কপি সংগ্রহ করা যায়। উইল বা অছিয়ত দলিলের ক্ষেত্রেও ৩ ও ৪ নম্বর বহি থেকে তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
তল্লাশির ফি
- একটি নির্দিষ্ট বছরের জন্য: ২০ টাকা
- অতিরিক্ত প্রতি বছর: ১৫ টাকা
- রেজিস্টার বহির প্রতিটি পৃষ্ঠা পরিদর্শন: ১০ টাকা
তবে সর্বোচ্চ ফি সীমা রাখা হয়েছে ১৫০ টাকা।
দলিল খুঁজে পাওয়ার অবস্থা
১. যদি মূল দলিল থাকে, তবে শেষ পাতার উল্টো পৃষ্ঠায় দলিল নম্বর ও রেজিস্টার বইয়ের তথ্য পাওয়া যায়। এ তথ্য দিয়ে সরাসরি নকল সংগ্রহ করা সম্ভব।
২. যদি মূল দলিল না থাকে বা তথ্য জানা না থাকে, তবে সূচিবহি তল্লাশি করতে হয়। এখানে ক্রেতা-বিক্রেতার নাম কিংবা মৌজার নাম অনুযায়ী দলিল খুঁজে পাওয়া যায়।
বিনা ফিতে পাওয়ার সুযোগ
যদি মূল দলিল বা তার সত্যায়িত কপি আবেদনের সঙ্গে দাখিল করা হয়, তবে তল্লাশি ফি দিতে হয় না। মামলা-সংক্রান্ত নথি পরিদর্শনের ক্ষেত্রেও একবার ফি প্রদান যথেষ্ট।
অ্যাডভোকেট লিমনের মতে, পুরাতন দলিল হারিয়ে গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আইন মেনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে নির্ধারিত ফি দিয়ে সহজেই দলিল উদ্ধার সম্ভব। জমি-সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত কার্যকর।