
আইপিএল মিনি নিলামে বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন এক গর্বের অধ্যায় যোগ করলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটির ইতিহাসে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আইপিএলের ১৯তম আসরের মিনি নিলামে ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের মোস্তাফিজকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে দলে ভেড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স।
নিলামের শুরু থেকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয় বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। ২০২৬ মৌসুমের আইপিএল নিলামে নাম ছিল সাত বাংলাদেশির, কিন্তু দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও কারও নাম ডাকা হচ্ছিল না। অবশেষে রাতের শুরুতে যখন সঞ্চালকের কণ্ঠে ভেসে আসে মোস্তাফিজুর রহমানের নাম, তখনই নিলামের চিত্র পাল্টে যায়।
প্রথমে দর হাঁকে দিল্লি ক্যাপিটালস। এরপর লড়াইয়ে যোগ দেয় চেন্নাই সুপার কিংস। শেষ দিকে কলকাতা নাইট রাইডার্স যুক্ত হলে শুরু হয় ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। মুহূর্তের মধ্যেই দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত চেন্নাইকে পেছনে ফেলে মোস্তাফিজকে নিজেদের ডেরায় টেনে নেয় কলকাতা।
২০১৬ সালে আইপিএলে অভিষেকের পর আট মৌসুমে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন মোস্তাফিজ। তবে এবারই প্রথম কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলতে যাচ্ছেন তিনি—তাও আবার বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে। এর আগে কলকাতার জার্সিতে খেলেছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। মোস্তাফিজ হলেন চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে কলকাতায় নাম লেখানো ক্রিকেটার।
আইপিএলে এটি হবে মোস্তাফিজের ষষ্ঠ ফ্র্যাঞ্চাইজি। এর আগে তিনি খেলেছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, দিল্লি ক্যাপিটালস ও চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। সব মিলিয়ে আইপিএল ক্যারিয়ারে ৬০ ম্যাচে ৮.১৩ ইকোনমি রেটে ৬৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
২০১৬ সালের অভিষেক আসরেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে তাদের প্রথম শিরোপা জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজ। সেই পারফরম্যান্সের পর থেকেই আইপিএলের দলগুলোর নজরে ছিলেন ‘কাটার মাস্টার’। তবে এতদিন কোনো নিলামেই তার দাম ২ কোটি ২০ লাখ রুপির বেশি ওঠেনি। এবার সেই সব রেকর্ড ভেঙে তার মূল্য পৌঁছাল ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে।
এর আগে আইপিএল নিলামে সর্বোচ্চ দামি বাংলাদেশি ক্রিকেটার ছিলেন সাকিব আল হাসান। ২০২১ সালে তাকে ৩ কোটি ২০ লাখ রুপিতে দলে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকেও ২০০৯ সালে কলকাতা ৬ লাখ ডলারে কিনেছিল, যা তখনকার বাজারদরে প্রায় ৩ কোটি রুপির কাছাকাছি ছিল। তবে এবার মোস্তাফিজুর রহমান সেই সব কিছুকে ছাড়িয়ে গিয়ে আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ডের মালিক হলেন।


