বগুড়ার শেরপুর থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, আটক স্বামী

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার মোছা. লিজা খাতুন নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরের পর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের কাফুরা পূর্বপাড়া গ্রামস্থ বসতবাড়ির নিজ শয়নকক্ষ থেকে নিহতের লাশটি উদ্ধার করা হয়। সেইসঙ্গে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরপরই নিহতের স্বামী মো. সোহেল রানাকে (৩০) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয় জনতা।
এদিকে ওই গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, গৃহবধূ মোছা. লিজা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য শয়নকক্ষের তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে তার অভিযুক্ত স্বামীর দাবি, অভিমান করে নিজেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, বিগত তিন বছর আগে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের কাফুরা পূর্বপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে মো. সোহেল রানার সঙ্গে পাশের খামারকান্দি ইউনিয়নের ভাতারিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে মোছা. লিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে আব্দুর রহিম নামের এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী সোহেল রানা পেশায় একজন শ্রমিক। প্রতিদিনে মজুরির যে টাকা পান তা দিয়েই সংসার চলে। তাই সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। এই কারণে প্রায়ই তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাত্র সত্তর টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এমনকি ওই ঝগড়ার জের ধরে রোববার সকালে লিজা খাতুনকে মারধর করেন স্বামী সোহেল রানা। পরবর্তীতে শয়নকক্ষ থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। এটি পরিকল্পিত হত্যা না আত্মহত্যা সেটি জানতেই থানায় আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান তারা।
আটক হওয়া নিহতের স্বামী সোহেল রানা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, শনিবার রাতে তার কাছে স্ত্রী লিজা খাতুন সত্তর টাকা চান। সঙ্গে সঙ্গে বের করে দেই। কিন্তু সকাল বেলা আবার টাকা চাইলে রাতের বেলায় দেওয়া টাকার কথা জানতে চাই। কিন্তু কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় তাকে দু-একটি চড়থাপ্পড় মেরে বাড়ি থেকে চলে যাই। এরপর বাড়ি এসে দেখি স্ত্রী লিজা খাতুন গলায় ফাঁস দিয়েছে। এছাড়া আর কিছু জানি না বলে মন্তব্য করেন।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী সোহেল রানাকে আটক করা হয়েছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা সেটি এখন বলা সম্ভব নয়। লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেলেই কেবল এই রহস্যের জট খুলবে। আর সেই মোতাবেক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।