বগুড়ার ইতিহাস

বগুড়ার নবাবজাদা মরহুম আলতাফ আলী চৌধুরীর জীবন চরিত



মরহুম আলতাফ আলী চৌধুরী ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বগুড়া জেলার মাটিডালি পুরাতন নবাববাড়ি মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতাঃ ধনবাড়ি, টাঙ্গাইলের বিখ্যাত নবাব সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরী এবং মাতাঃ মরহুমা আলতাফন্নেছা চৌধুরী (বগুড়া জেলার একমাত্র নবাব এবং প্রখ্যাত জমিদার মরহুম আব্দুস সোবাহান চৌধুরীর একমাত্র কন্যা)। পিতা মাতার একমাত্র পুত্র ছিলেন তিনি। পিতা ও মাতার নামানুসারে তাহার নাম রাখা হয় আলতাফ আলী চৌধুরী।
মরহুম আলতাফ আলী চৌধুরীর তার মাতা সৈয়দা আলতাফন্নেছা চৌধুরী অকালে ইন্তেকাল করলে তিনি বাল্যকালে তাহার পিতার সহিত কলকাতায় গমন করেন। সেখানেই তিনি কলকাতা মাদ্রাসা হতে প্রাথমিক শিক্ষা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন।


কর্মজীবনের শুরুতে তিনি প্রায় তিন বৎসর সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক গভর্নর কর্তৃক নোয়াখালি জেলার ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি বরিশাল জেলায় ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে অধিষ্ঠিত হন।


পরবর্তী সময়ে তিনি সরকারি চাকুরী থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বগুড়ায় ফিরে আসেন এবং মাতামহের প্রতিষ্ঠিত ওয়াকফ এস্টেটের মালিকানা প্রাপ্ত হন।


তিনি (১৯১৪-১৯২৩) খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বগুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।পরবর্তী সময়ে তিনি দেশ বন্ধু চিত্ররঞ্জন দাসের নেতৃত্বে গঠিত স্বরাজ্য দলে যোগদান করেন। এই দলের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ পূর্ব (মুসলিম কোটা) থেকে বঙ্গীয় ব্যাবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯২৪-১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি (১৯২৬-১৯৩২) এবং (১৯৪২-১৯৪৩) দুই মেয়াদে বগুড়া জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


সামাজ সেবায় তাহার ভুমিকা:বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলাধীন আলতাফ নগর রেল ষ্টেশন স্থাপনে ভুমিকা পালন করায় তাহার নামানুসারে আলতাফ নগর রেল ষ্টেশন নামকরন করা হয়। তিনি বগুড়া জেলা শহরে এডওয়ার্ড পার্ক স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং অর্থদাতা। বগুড়া উর্ডবার্ণ লাইব্রেরীর উন্নয়নে অর্থসহায়তা প্রদান করেন। খেলা ধুলার প্রতি ছিল তাহার বিশেষ উৎসাহ, তিনি নিজেও খুব ভাল ফুটবল খেলতেন। তিনি বগুড়া জেলা দলের নিয়মিত খেলওয়ার ছিলেন। তাহার প্রচেষ্টায় বগুড়া জেলার টাউন ক্লাব গঠিত হয়।


মরহুম আলতাফ আলী চৌধুরীর ৬ পুত্র এবং ১ কন্যা ছিল। প্রথমা স্ত্রীর সন্তানদের মধ্য মরহুম মুহাম্মদ আলী চৌধুরী, আহম্মদ আলী চৌধুরী, মরহুম হামেদ আলী চৌধুরী, মাহমুদ আলী চৌধুরী এবং কন্যা মাহমুদা চৌধুরী এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে আমির আলী চৌধুরী এবং ওমর আলী চৌধুরী।


মানবসেবায় নিয়োজিত পথিকৃৎ মরহুম আলতাফ আলী চৌধুরী ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরন করেন।


লেখার কাজ চলমান………


তথ্যসুত্র:বগুড়ার ইতিহাস- প্রভাস চন্দ্র সেন বগুড়ার ইতিকাহিনী -কাজি মোহাম্মাদ মিছের বগুড়া সেতিহাস- কালিকমল সার্ব্বভৌম।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button