
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। টাঙ্গাইলের সন্তোষে তার সমাধিস্থলকে ঘিরে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি চলছে। পরিবার, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মুরিদান, ভক্ত, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন পক্ষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন আয়োজন করেছে। ভাসানী ফাউন্ডেশন ও খোদা-ই-খেদমতগারের উদ্যোগে চলছে সাত দিনব্যাপী ‘ভাসানী মেলা’, যেখানে দেশজ পণ্যের স্টল ও সাংস্কৃতিক আয়োজন রয়েছে।
বিএনপি ‘মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি’ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনাসভার পর আজ তারা সন্তোষে মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা করবে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিও ‘গণঅভ্যুত্থান-২৪ পরবর্তী সময় বাংলাদেশে মওলানা ভাসানীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা আয়োজন করেছে।
ভাসানীর রাজনৈতিক জীবন নিপীড়িত মানুষের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে পূর্ণ। ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জে জন্ম নেওয়া তিনি ১৯০৩ সালে বিপ্লবী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হন এবং পরে দেওবন্দে ইসলামি শিক্ষায় যুক্ত হন। ১৯১৭ সালে চিত্তরঞ্জন দাসের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯২৩ সালে স্বরাজ্য পার্টি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং ১৯২৬ সালে আসামে কৃষক-প্রজা আন্দোলন শুরু করেন। ১৯২৯ সালে ধুবড়ীর ভাসান চরে কৃষক সম্মেলন থেকেই তার নামের সঙ্গে ‘ভাসানী’ উপাধি যুক্ত হয়। বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্ব, ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে ‘খামোশ’ উচ্চারণ এবং স্বাধীনতাযুদ্ধকালে প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি হিসেবে তিনি ইতিহাসে গভীর দাগ রেখে গেছেন।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ সন্তোষে মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। অনেকেই কয়েক দিন আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ভাসানীর সংগ্রাম সবসময় ‘অসহায় মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের’ পক্ষে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
অন্যদিকে ন্যাপ নেতারা বলেন, স্বাধীনতার দাবি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রথম সামনে আনা এবং পূর্ববাংলার আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রশ্নকে জোরালো করার ক্ষেত্রে ভাসানীর ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাসানীকে অবহেলার সমালোচনা করে ১৭ নভেম্বর তার মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।



