স্বাস্থ্য

হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ, কী করবেন

সময়মতো পিরিয়ড হওয়া মানে শরীরের হরমোন ও প্রজনন ব্যবস্থার ভারসাম্য ঠিক আছে। কিন্তু চক্র অনিয়মিত হয়ে গেলে সেটি শরীরের ভেতরের কোনো পরিবর্তন বা সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। তাই হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে বা সময়ের তারতম্য দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সাধারণভাবে নারীদের গড় পিরিয়ড চক্র ২৮ দিন। ২১ দিনের কম বা ৩৫ দিনের বেশি ব্যবধান হলে সেটি অনিয়মিত ধরা হয়। অনিয়মিত পিরিয়ড প্রজনন ক্ষমতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে ৪০ বছরের নিচে কারও পিরিয়ড অনিয়মিত হলে কিংবা সাত দিনের বেশি স্থায়ী হলে, তা উদ্বেগের বিষয়।

পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো—

১. অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া:
হঠাৎ করে ছয় মাসে ৫% বা তার বেশি ওজন কমে গেলে তা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। অতিরিক্ত ব্যায়াম ও অপর্যাপ্ত খাবার শরীরে ইস্ট্রোজেন উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যা পিরিয়ডে প্রভাব ফেলে।

২. ওজন বেড়ে যাওয়া:
ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলেও মাসিক চক্র ব্যাহত হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, কম ঘুম বা শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এ সমস্যার মূল কারণ। তাই নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং সুষম খাবার প্রয়োজন।

৩. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS):
ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট তৈরি হলে এটি ঘটে। এতে ডিম্বানু স্বাভাবিকভাবে পরিপক্ব হয় না বা ডিম্বস্ফোটন ব্যাহত হয়। অনিয়মিত জীবনযাপন, ধূমপান ও মানসিক চাপ PCOS-এর ঝুঁকি বাড়ায়।

৪. মেনোপজ বা আগাম মেনোপজ:
সাধারণত ৪৫-৫৫ বছর বয়সে মেনোপজ হয়, যখন টানা ১২ মাস মাসিক বন্ধ থাকে। তবে কেউ কেউ ‘আর্লি মেনোপজ’-এ ভোগেন, যেখানে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়।

৫. থাইরয়েডের সমস্যা:
থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে পিরিয়ড দেরিতে আসা, অতিরিক্ত রক্তপাত বা দীর্ঘ বিরতি দেখা দিতে পারে। এটি চিকিৎসাযোগ্য হলেও নিয়মিত পরীক্ষা দরকার।


পিরিয়ড অনিয়মিত হলে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এটি শরীরের ভেতরের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button