কম বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ, কী করবেন?

দেশে এখন তরুণদের মধ্যেই হাইপারটেনশনের হার দ্রুত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং প্রযুক্তিনির্ভর নিষ্ক্রিয় জীবনধারা এই বৃদ্ধির মূল কারণ। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে—২০ থেকে ৪০ বছরের কম বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৩.৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এ বয়সে ঝুঁকিগুলো দ্রুত বাড়ায় হৃদ্রোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতার আশঙ্কাও বেশি থাকে।
লক্ষণ
• সকালে ঘুম থেকে উঠে মাথাব্যথা
• মাথা ঘোরা বা চোখ ঝাপসা দেখা
• বুক ধড়ফড় বা অস্বস্তি
• খুব সহজেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া
• নাক দিয়ে রক্ত পড়া (অনেক সময়)
• শ্বাসকষ্ট বা বুকে টান
অনেক ক্ষেত্রে আবার কোনো লক্ষণই থাকে না—এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক।
কেন হয়
• অতিরিক্ত লবণ ও ফাস্টফুড খাওয়া
• ঘুমের ব্যাপক অনিয়ম
• মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ
• ব্যায়ামহীন জীবনধারা
• অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
• ধূমপান ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন
• হরমোনজনিত সমস্যা বা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
• কিডনি বা থাইরয়েডের সমস্যা
• অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম ও দীর্ঘসময় বসে থাকা
বংশগত কি না
হ্যাঁ—পরিবারে বাবা-মা বা নিকট আত্মীয়ের হাইপারটেনশন থাকলে কম বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। জিনগত ঝুঁকি থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি জীবনযাপন।
কি করবেন
• রক্তচাপ নিয়মিত মাপুন—সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন একই সময়ে।
• লবণ কমান—চিপস, আচার, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
• ব্যায়াম—প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা।
• ওজন কমান—সঠিক খাদ্যাভ্যাসে BMI নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
• ঘুম ঠিক করুন—প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা।
• মানসিক চাপ কমান—শ্বাস-প্রশ্বাস ও বিশ্রামের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
• ধূমপান বন্ধ করুন, অতিরিক্ত চা-কফি কমান।
• অ্যালকোহল এড়ান।
• তরুণ বয়সেও প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ শুরু করুন—নিজে নিজে ওষুধ পরিবর্তন বা বন্ধ করবেন না।
• প্রতি ৩–৬ মাস অন্তর চেকআপ—কিডনি, লিপিড প্রোফাইল, ইসিজি ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের সতর্ক বার্তা
উচ্চ রক্তচাপ বয়স দেখে আসে না। তরুণ বয়সে এটি অস্বাভাবিক হলেও এখন খুবই সাধারণ। তাই সামান্য অস্বস্তিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সময়মতো পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণই ভবিষ্যতের বড় জটিলতা—হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা কিডনি বিকল—থেকে রক্ষা করতে পারে।



