এক নজরে জুলাই সনদ, কী আছে এতে?
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাত দফা অঙ্গীকার গৃহীত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই সাত দফা অঙ্গীকারনামা।
প্রথম দফায় উল্লেখ করা হয়েছে, জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রামের ঐতিহাসিক মোড় ছিল ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান। হাজারো মানুষের ত্যাগ ও আত্মদানেই এই সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই অর্জনের ধারাবাহিকতায় প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে, জনগণ যেহেতু রাষ্ট্রের মালিক, তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এই সনদ গ্রহণ করেছে। তাই সনদটি সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা উপযুক্তভাবে সংযুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।
তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদের বৈধতা বা প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না; বরং এর প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
চতুর্থ দফায় উল্লেখ করা হয়েছে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের জন্য জনগণের ১৬ বছরের সংগ্রাম এবং বিশেষত ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
পঞ্চম দফায় বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে। শহিদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান, শহিদ পরিবার ও আহতদের যথোপযুক্ত সহায়তা, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ‘জুলাইযোদ্ধা’দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই দফা সংশোধন করা হয়। সংশোধিত অংশে যোগ করা হয়েছে— “শহিদ পরিবার ও আহত জুলাইযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি, মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।”
ষষ্ঠ দফায় সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ কাঠামো ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এসব বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি ও প্রবিধি সংশোধন বা নতুনভাবে প্রণয়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
সপ্তম ও শেষ দফায় বলা হয়েছে, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, অন্তর্বর্তী সরকার সেগুলো দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করবে, কোনো প্রকার বিলম্ব ছাড়াই।
তথ্যসূত্র: খবরের কাগজ
