সারাদেশ

সিরাজগঞ্জে এইচআইভি আক্রান্ত বেড়ে ২৫৫, রেডজোন ঘোষণা

সিরাজগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা। ২০২০ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত জেলায় ২৫৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলাটিকে ‘রেডজোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের এআরটি সেন্টারের তথ্যানুসারে, শনাক্ত হওয়া রোগীদের ৭৩ শতাংশই ইনজেকটিভ ড্রাগ ব্যবহারকারী। ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলায় এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর বছর বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে—২০২০ সালে ৪ জন, ২০২১ সালে ৮ জন, ২০২২ সালে ৬৯ জন, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে আরও ১৩৬ জন এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

সেন্টারের কাউন্সেলর ও প্রশাসক মাসুদ রানা জানান, আক্রান্ত ২৫৫ জনের মধ্যে ১৮৭ জন ইনজেকটিভ ড্রাগ ব্যবহারকারী, ২৯ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ৩৫ জন সাধারণ মানুষ এবং ৪ জন যৌনকর্মী। তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা নিষিদ্ধ নেশাজাতীয় ইনজেকশন ব্যবহারের মাধ্যমে এ ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে। আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধ ও কাউন্সেলিং দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, ‘অনেকে অজান্তে একই সুই বা সিরিঞ্জ ভাগাভাগি করে নেয়। এতে রক্তের মাধ্যমে এইডস ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, বাকিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকিকুন নাহার বলেন, নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যেই ইনজেকটিভ ড্রাগের ব্যবহার বেশি। ফলে তাদের মধ্যে সংক্রমণের হারও বেশি। তিনি বলেন, ‘আমরা আক্রান্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সহায়তা দিচ্ছি। তবে ইনজেকটিভ ড্রাগের ব্যবহার কমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।’

সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত দুই বছরে বিভিন্ন অভিযানে প্রায় এক হাজার ৯০০ অ্যাম্পল ইনজেকটিভ ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নেশাজাতীয় ইনজেকশন বিক্রেতাদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চলছে।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, ‘এইডস প্রতিরোধে মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা হবে।’

তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button