বগুড়া সদর উপজেলা

মহাস্থান-মাটিডালী হাইওয়েতে লেগুনায় ঝুলন্ত শিশু হেলপার, কিশোর চালক



সম্প্রতি বগুড়া অঞ্চলের সিএনজিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচলে হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এ সুযোগে মোকামতলা, মহাস্থান ও মাটিডালী রুটে নেমে পড়েছে লেগুনাসহ নানা নামে পরিচিত ছোট গাড়িগুলো। এসব গাড়ির চালক এবং হেলপারদের বেশিরভাগই শিশু-কিশোর। এসব চালকের গাড়ি চালানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। জানে না ট্রাফিক আইন, মানে না সিগন্যাল। বড় গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলে। স্বল্প দূরত্বের রাস্তায় বিকল্প কোনো না থাকায় যাত্রীদের এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে অনেক আতঙ্কের মাঝেই পথ চলতে হয়। এছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে গাড়ির পেছনে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে শিশু হেলপার।


এতে যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড ও সদরের মাটিডালী বিমানমোড় এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপর লেগুনা আসা-যাওয়া করছে। এসব লেগুনার অনেক চালকই কিশোর বয়সী। আর এসব লেগুনার হেলপার মূলত ১০ থেকে ১২ বছরের শিশুরা।


মহাস্থান থেকে মাটিডালী রুটে লেগুনা চালায় ১৬ বছর বয়সী নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর জানায়, ২বছর হেলপারি করার পর ওস্তাদ একটু একটু করে চালাতে দিতো। এভাবেই গাড়ি চালানো শিখছি। এখন পুরোপুরি চালাই।


এই লাইনে যত চালক গাড়ি চালায়, অনেকেরই আসল ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। আর এ রুটে গাড়ি চালাতে কোনো প্রশিক্ষণ বা কাগজপত্র লাগে না, মনে সাহস থাকলেই চলে বলে এসব কিশোর চালকেরা জানায়।


এদিকে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ ধারায় শিশুদের সুবিধাপ্রাপ্তি-সংক্রান্ত বিশেষ বিধান রয়েছে। শ্রম আইন, ২০০৬ অনুসারে, কাজে যোগদানের ন্যূনতম বয়স হচ্ছে ১৪ বছর আর ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে তা ১৮ বছর। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে হালকা কাজ করলে সেটাকে ঝুঁকিমুক্ত কাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; যা তাদের পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটায়।


অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব রেগুনারের প্রকৃত মালিকেরা নামেমাত্র বেতনে অদক্ষ কিশোর চালক ও শিশু হেলপারদের দ্বারা বিপজ্জনকভাবে গাড়ির চাবি তুলে দিচ্ছেন। মহাসড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতন মহল তড়িৎ এসব পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।


আজিজুল হক বিপুল

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button