
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও দুর্ঘটনা রোধে সারাদেশে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, “ফিটনেসবিহীন, লক্কর-ঝক্কর ও কালো ধোঁয়া নির্গত কোনো যানবাহনকে সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সারাদেশে বিশেষ অভিযান চালাব।”
শুক্রবার সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩২ শতাংশ নিহতের বয়স ৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, অধিকাংশ জেলায় পরিদর্শনে দেখা গেছে প্রায় ৬০ শতাংশ মোটরসাইকেল চালক হেলমেট ছাড়া চলাচল করেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই অবস্থা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানান, দেশে যেসব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদানের সক্ষমতা রয়েছে, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “যেসব পেশাদার চালক ১০ থেকে ১৫ বছর দুর্ঘটনামুক্তভাবে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের অভিজ্ঞতাকে আমরা নতুন চালকদের প্রশিক্ষণে কাজে লাগাব।”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক (প্রশাসন) হেমায়েত উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা (পিপিএম)।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক পার্কন চৌধুরী, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হোসেন, বিআরটিএ সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) হারুন উর রশিদ, মোটরযান পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম, এবং মোটর মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে ৫ লাখ টাকা করে ও আহত একজনের হাতে ১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান।
মোট ৮১ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চেক প্রদান করা হয় এদিন।
এ নিয়ে চলতি বছরের মে মাস থেকে ছয় মাসে বগুড়া জেলায় মোট ৪৯ জনকে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় বিআরটিএ।



