
নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ায় জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা বন্ধ করা হয়েছে। এ সময় বন্ধ করা নিয়ে জেলা প্রশাসন ও মেলার আয়োজকদের একটি অংশের বাকবিতণ্ডা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১২ টার দিকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল এসে এই মেলা বন্ধ করে দেয়।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ৩ অক্টোবর বগুড়া শহরের মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল মাঠে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া। গত ২৮ অক্টোবর মেলার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পরে গতকাল সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন বিষয়টি মেলা কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে আজ বেলা ১২ টার দিকে মেলার স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
তবে এ সময় মেলার স্থাপনা সরানোর জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষে এনসিপির নেতৃবৃন্দ সময় দাবি করেন জেলা প্রশাসনের কাছে। পরে এ নিয়ে দুপক্ষের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়।
মেলায় নিজেদের ব্যবসা রয়েছে দাবি করে এনসিপির বগুড়া জেলার সমন্বয়ক সুলতান মাহমুদ জানান, গতকাল রাতে মেলা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। আমরা মেলা বন্ধ রেখেছি। কিন্তু দোকান সরানোরি জন্য সময় চেয়েছি। আর আমাদের মেলার জন্য এই মাঠ ২ নভেম্বর পর্যন্ত নেয়া আছে। তারপরেও তারা আজকে মেলা উচ্ছেদ করার চলে এসেছে। এখানে অন্তত ২০০-২৫০ কোটি টাকার ব্যবসা আছে। এভাবে একদিনের মধ্যে উচ্ছেদ করা সম্ভব? এতে ব্যবসায়ীদের পন্য, সম্পত্তির নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে মেলার স্থাপনা সরানোর জন্য সময় চেয়েছি আমরা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল ইসলাম জানান, মেলার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সময় দেয়া হয়েছিল ১৫ দিন। পরে মেলার আয়োজকরা হাইকোর্ট থেকে এক মাসের মেয়াদ নিয়ে আসেন। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও মেলা চলমান ছিল। সেই জন্য মেলা বন্ধ করতে এসেছি আমরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, তাদের বলা হয়েছে নিজেদের দোকান-স্থাপনা সরিয়ে নিতে। তারা নিজেরা সরিয়ে নেয়ার কথা বলেও কালক্ষেপন করছে। আর তারা না সরাতে পারলে আমাদের লোক দিয়ে দোকান-পাট অপসারণ করা হবে।
এ ছাড়া এদিন ঠনঠনিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা মেলা বন্ধের দাবিতে সড়কের পাশে অবস্থান নেন। আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আফছার আলী জানান, হাসপাতাল মাঠে মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। আবার নামাজের সময় মেলায় উচ্চস্বরে গান চলে। এই এলাকায় হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিক বেশি। কিন্তু মেলার কারণে রাস্তায় সব সময় জ্যাম থাকে। এতে রোগীদের প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়।
আফছার আলী বলেন, এসব নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে বেশ কয়েকবার জানিয়েছি। পরে আজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি আমরা।
মেলা উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়া, সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা মঞ্জুর, ওসি হাসান বাসিরসহ একাধিক পুলিশ সদস্য, বিদ্যুৎ বিভাগ, পৌরসভার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা ছিল।



