লাইফস্টাইল

অতিরিক্ত রেগে যাওয়া কি একটি রোগ? কারণ, ঝুঁকি ও প্রতিকার

ছবি: পেক্সেল্স ডটকম।

আমরা সবাই মাঝে মাঝে রেগে যাই—কোনো পরিস্থিতি বা মানুষের আচরণ আমাদের উত্তেজিত করে। কিন্তু যদি রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং প্রায়ই জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা তখন শুধু স্বাভাবিক ক্ষোভ নয়, বরং একটি সমস্যা বা রোগের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে “অ্যাংগ্রি ম্যানেজমেন্ট সমস্যা” বা ক্রমাগত রাগজনিত আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

অতিরিক্ত রাগের কারণ

১. স্ট্রেস ও চাপ: কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যা বা আর্থিক উদ্বেগ রাগ বাড়াতে পারে।
২. মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: উদ্বেগ, হতাশা, বিষণ্ণতা বা অতীতের ট্রমা রাগের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে।
৩. হরমোন ও রসায়ন: মস্তিষ্কের সেরোটোনিন ও ডোপামিনের ভারসাম্যহীনতা, থাইরয়েড সমস্যা বা অন্যান্য হরমোনজনিত পরিবর্তন রাগের মাত্রা বাড়ায়।
৪. পরিপার্শ্বিক প্রভাব: সহিংস পরিবেশ, অশান্ত পরিবার বা সামাজিক চাপও রাগ বাড়াতে সহায়ক।

অতিরিক্ত রাগের ঝুঁকি

পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের অবনতি

কর্মজীবনে সমস্যা ও পেশাগত ক্ষতি

শারীরিক সমস্যা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি

অতিরিক্ত রাগ থেকে বাঁচার উপায়

১. নিজেকে চিহ্নিত করুন: রাগের আগ মুহূর্তে নিজেকে চিহ্নিত করতে শিখুন। মনে রাখুন কোন পরিস্থিতি বা আচরণ আপনাকে উত্তেজিত করে।
২. শ্বাস-প্রশ্বাস ও মেডিটেশন: ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। নিয়মিত মেডিটেশন, যোগব্যায়াম ও শিথিলকরণ রুটিন রাগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩. শারীরিক ব্যায়াম: নিয়মিত হাঁটা, দৌড় বা ব্যায়াম রাগ কমাতে প্রাকৃতিক উপায়।
৪. মনোচিকিৎসা বা কাউন্সেলিং: পেশাদার মনোচিকিৎসক বা কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলে রাগের মূল কারণ নির্ধারণ ও মোকাবেলা করা যায়।
৫. সৃজনশীল প্রকাশ: লেখা, গান, ছবি বা হবি মাধ্যমে রাগের অনুভূতি প্রকাশ করা উপকারী।
৬. আবেগ নিয়ন্ত্রণ কৌশল: রাগ আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু মুহূর্ত থেমে মন স্থির করা, পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা ও সমাধানমুখী চিন্তা করা জরুরি।
৭. প্রয়োজনে ওষুধ: গুরুতর ক্ষেত্রে ডাক্তার পরামর্শে ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।

মাঝে মাঝে রেগে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও, অতিরিক্ত ও নিয়ন্ত্রণহীন রাগ জীবন ও স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই নিজের রাগের কারণ চিহ্নিত করা, নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক যত্ন নেওয়া এবং প্রয়োজনে পেশাদার সহায়তা নেওয়া জরুরি। নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব এবং মানসিক শান্তি, সম্পর্কের স্থায়িত্ব ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button